স্বদেশ ডেস্ক:
যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করে গর্ভের দুই মাসের সন্তানকে নষ্ট করার অভিযোগে পুলিশ সদস্য মো: তাজুল ইসলাম রুবেলকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
মো: তাজুল ইসলাম রুবেল দীর্ঘ দিন পলাতক থাকার পরে মঙ্গলবার সকালে ওই ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠায়। রুবেল পিরোজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয় কর্মরত রয়েছেন।
মঙ্গলবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: হাফিজুর রহমান ওই আদেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মো: তাজুল ইসলাম রুবেল বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের লেমুয়া গ্রামের মোস্তফা গাজীর ছেলে ২০২১ সালের ৫ আগস্ট ছুটিতে বাড়ি এসে চাকরির প্রোমোশনের জন্য স্ত্রী সুমি আকতারের নিকট ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।
স্ত্রী যৌতুক দিতে অস্বীকার করলে রুবেল উত্তেজিত হয়ে তার গর্ভবতী স্ত্রীর তলপেটে লাথি মারে। স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গর্ভের দুই মাসের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।
রুবেলের শাশুরী হেলেনা বেগম বরগুনা থানায় ১০ আগস্ট মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে ১লা সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে তদন্ত শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর ওই ট্রাইব্যুনাল তাজুল ইসলাম রুবেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেয়।
রুবেলের স্ত্রী সুমি আক্তার পিরোজপুর পুলিশ সুপার বরাবরে ৭ ফেব্রুয়ারি মামলার বর্ণনা দিয়ে রুবেলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বাদী হেলেনা বেগম বলেন, আমি মামলা করার পর আমার জামাতা রুবেল আমাকে ও আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বরিশাল ডিআইজি অফিসে নিয়েছে। সেখানে আমরা রুবেলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার পরে পুলিশ রুবেলকে বরখাস্ত করেনি। আমরা রুবেলের বিচার চাই।
রুবেল কোর্ট বারান্দায় পুলিশের সামনে উচ্চস্বরে চিৎকার দিয়ে বাদীর আইনজীবীকে গালমন্দ করে বলে, জামিনে মুক্তি পেয়ে পিরোজপুর থানায় মামলায় জড়িত করে দেব। সুমিকে তালাক দেব। কোর্ট পুলিশ রুবেলকে শান্ত করে।
এ বিষয়ে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মো: সাইদুর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন, তাজুল ইসলাম রুবেল জেলহাজতে যাওয়ার বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানলাম, আদালতের আদেশ পাওয়ার পরে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।